বাংলাদেশের
পাকিস্তান সফর নিয়ে তৈরি হয়েছে নতুন অনিশ্চয়তা। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড
(বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়েছেন, কিছু
ক্রিকেটার এবং অধিকাংশ বিদেশি কোচ দেশটিতে যেতে ইচ্ছুক নন। যেসব ক্রিকেটার
যেতে ইচ্ছুক, তারাও লম্বা সময় সেদেশে থাকতে রাজি হচ্ছেন না।
আগামী মাসে
পাকিস্তানের হোম সিরিজ হিসেবে তিনটি টি-টোয়েন্টি আর দুটি টেস্ট খেলার কথা
বাংলাদেশের। পাকিস্তানের নিরাপত্তা খতিয়ে দেখে বিসিবি কেবল টি-টোয়েন্টি
খেলতে সেদেশে যাওয়ার ব্যাপারে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে। আর টেস্ট সিরিজ
নিরপেক্ষ ভেন্যুতে খেলার ইচ্ছা জানিয়েছে তারা। বাংলাদেশের এই সিদ্ধান্ত
জানার পর তীব্র প্রতিক্রিয়া এসেছে পাকিস্তানের কাছ থেকে। নিরপেক্ষ ভেন্যুতে
খেলার আহ্বান প্রত্যাখ্যানও করেছে তারা।
এই নিয়ে
কথা চালাচালির মধ্যে বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) বিসিবি সভাপতি দিলেন নতুন
খবর। টেস্ট তো বটেই, টি-টোয়েন্টি খেলতেও পাকিস্তান যেতে নাকি রাজি নন দলের
কয়েকজন ক্রিকেটার ও বিদেশি কোচিং স্টাফ, ‘কোচিং স্টাফদের অনেকে আগেই জানিয়ে
দিয়েছে যে ওরা যাবে না। কেউ কেউ বলেছে যেতে পারে। তবে খুব কম সময়ের জন্য।
বেশিরভাগই যেতে রাজি হয়নি। খেলোয়াড়দের সঙ্গেও কথা বলেছি। খেলোয়াড়দের সঙ্গে
কথা বলে বুঝেছি যে কিছু কিছু ক্রিকেটার যেতে চায় না। তারকা খেলোয়াড়দের
অনেকেই যেতে ইচ্ছুক না। কিছু ক্রিকেটার যেতে রাজি আছে, তবে খুব কম সময়ের
জন্য।’
কেবল
টি-টোয়েন্টি খেলতে যেতে যেসব ক্রিকেটার যেতে রাজি, তাদের পরিবার থেকেও
পাকিস্তানে যাওয়ার ব্যাপারে নেতিবাচক কথা হচ্ছে, ‘একটা ফ্যাক্টর হলো ওদের
পরিবার। ওদের বাবা-মা, আত্মীয়-স্বজন সকলেই উদ্বিগ্ন পাকিস্তান সফর নিয়ে।
তাদের মত, না গেলে কী হয়। এরকম প্রতিক্রিয়া এসেছে (পরিবার থেকে)।’
বোর্ড
প্রধান জানান, যদি জুতসই একটা টি-টোয়েন্টি দল বানাতে পারেন, তবে
টি-টোয়েন্টি খেলতে যেতে পারেন তারা। তবে সেক্ষেত্রেও লাগবে সরকারের সব
বিভাগের ছাড়পত্র। তবে পাকিস্তানে লম্বা সময় থেকে পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলার
সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ বলে জানিয়েছেন নাজমুল।
সব কিছু
অনিশ্চয়তায় পড়ে গেলেও পাকিস্তান সফর বাতিল করছে না বিসিবি। কেবল
টি-টোয়েন্টি খেলার সম্ভাবনার কথা জানিয়ে পাকিস্তানকে নিজেদের অবস্থান
পুর্নব্যক্ত করেছে বোর্ড, ‘এটা এখনো চলছে (কথাবার্তা)। এমন না যে সব
চূড়ান্ত হয়ে গেছে। পাকিস্তান নিয়ে অনেকের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট ইস্যু আছে।
একটা হচ্ছে বোর্ডের সিদ্ধান্ত। তারপর খেলোয়াড় আছে, কোচিং স্টাফ আছে। ওদের
একটা মতামতের ব্যাপার আছে। ওরা চায় কি-না। আরেকটা হচ্ছে, সরকারের সব জায়গা
থেকে ছাড়পত্র পাওয়া যাচ্ছে কি-না।’
২০০৯ সালে
শ্রীলঙ্কা দলের উপর সন্ত্রাসী হামলার পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট বন্ধ হয়ে যায়
পাকিস্তানে। এরপর সীমিত পরিসরে ক্রিকেট ফিরলেও বেশিরভাগ দলই পাকিস্তানের
হোম সিরিজ খেলেছে নিরপেক্ষ ভেন্যুতে। দশ বছর পর এবারই প্রথম শ্রীলঙ্কা দল
পাকিস্তানে গিয়ে টেস্ট খেলে এসেছে। শ্রীলঙ্কা সিরিজ খেলার পর বাংলাদেশকে
নিজেদের দেশে নেওয়ার ব্যাপারে চাপ বাড়িয়েছে পাকিস্তান।
No comments