আবারও বিমায় ঝুঁকছে বিনিয়োগকারীরা

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সিংহভাগ ব্যাংকের শেয়ারের দর উঠেছে গত এক বছরের সর্বোচ্চ পর্যায়ে। ১৭ জানুয়ারি আগের ব্যাংকের শেয়ারের এমন দাম বাড়ায় এ খাত থেকে মুনাফা তুলতে চাচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা। ফলে বিক্রির চাপ বেড়েছে এ খাতে। এতে ব্যাংক খাতের শেয়ারের দাম কমতে শুরু করেছে। অন্যদিকে মন্দাবস্থা থেকে ফিরে এসেছে বিমা খাত। গতকাল রবিবার অনেকটাই চাঙ্গাবস্থায় দেখা গেছে এ খাতকে।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, লেনদেন হওয়া ৪৯টি বিমা কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৩৮টির কোম্পানির। অন্যদিকে ব্যাংক খাতের ৩০টি কোম্পানির মধ্যে সবকটি দর কমেছে। অবশ্য সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ব্যাংক ও বিমার মধ্যে তুলনা করলে অবশ্যই ব্যাংক শক্তিশালী। ২০১০ সালের পর ব্যাংকগুলো বোনাস লভ্যাংশ দিয়ে তাদের সিকিউরিটিজ সংখ্যা এত বেশি বাড়িয়েছে এক-দুদিন শেয়ার কিনে দামে প্রভাব ফেলা সম্ভব না। ফলে এ খাতে যখন শেয়ার কেনা হয় তখন দাম কিছুটা বাড়ে। আবার যখন মুনাফায় চলে আসে তখন বিক্রির চাপে দরপতন হয়। আর বিমাতে এ সমস্যা নেই। সিকিউরিটিজ সংখ্যা কম হওয়ায় শেয়ার ক্রয়-বিক্রয়ে বাজারে ভারসাম্য থাকে। তারা বলছেন, সম্প্রতি বিমা নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইডিআরএ থেকে বিমা কোম্পানিগুলোর জন্য যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল সেটিও বিনিয়োগকারীদের এ খাতের শেয়ারের প্রতি আগ্রহী করেছে।
আরও পড়ুন: তদন্ত স্থগিতের ঘোষণায় শেয়ারবাজারে বড় উত্থান
বিমা কোম্পানিগুলোকে আগে দেওয়া এমন চিঠি আবারও দেওয়া হয়েছে, যা নিয়ে পুঁজিবাজারে একটি শ্রেণি কারসাজি করে শেয়ারের দাম বাড়াচ্ছে। এক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীদেরও সতর্ক থেকে বিনিয়োগ করা উচিত। ইস্টার্ন ব্যাংকের শেয়ারের সর্বোচ্চ দরও গত এক বছরের সর্বোচ্চ অবস্থায় ফিরেছে এই সময়ে। ব্যাংকটির গত এক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ দরে পৌঁছেছে গত ১৭ জানুয়ারি ৩৯ টাকা। ব্যাংক এশিয়ার এক বছরের সর্বোচ্চ ১৯ টাকা অতিক্রম করেছে চলতি মাসে। এছাড়া তালিকাভুক্ত সিংহভাগ ব্যাংকের শেয়ারের দর গত ১৭ জানুয়ারির আগে এক বছরের সর্বোচ্চ দরে পৌঁছে।
মূল্যবৃদ্ধির দিক দিয়ে গতকাল শীর্ষ ২০ কোম্পানির মধ্যে বিমা কোম্পানি ছিল ৯টির। এগুলো হচ্ছে নিটল ইনসিওরেন্স, অগ্রণী ইনসিওরেন্স, পিপলস ইনসিওরেন্স, রিপাবলিক ইনসিওরেন্স, সিটি জেনারেল ইনসিওরেন্স, কন্টিনেন্টাল। দিনের লেনদেনের চিত্রে দেখা গেছে, গতকাল রবিবার দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২০ দশমিক ৬৩ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৮১৫ পয়েন্টে। শরিয়াহভিত্তিক কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসইএস সূচক ২ দশমিক ৬৮ পয়েন্টে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২৯৭ পয়েন্টে। এছাড়া বাছাই করা কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএস-৩০ সূচক ১ দশমিক ৭৪ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ২১০ পয়েন্টে। গতকাল লেনদন হওয়া ৩৫৯টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৭৯টির, কমেছে ২০২টির ও পাল্টায়নি ৭৮টির। এদিন পুঁজিবাজারে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৪৫৮ কোটি টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ২১৩ কোটি টাকা।
অন্য শেয়ার বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে-সিএসই প্রধান সূচক সিএএসপিআই ৩৪ দশমিক ৯২ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ৯৮৬ পয়েন্টে। লেনদেন হওয়া ২৫৩টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৬৭টির, কমেছে ১৪৫টির ও পাল্টায়নি ৪১টির। এদিন সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৫৬ কোটি ৮৪ লাখ টাকা।
No comments