অ্যাস্ট্রাজেনেকার বুস্টার অমিক্রনের বিরুদ্ধে ‘কার্যকর’
অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা বুস্টার হিসেবে দেওয়া হলে তা করোনার অতি সংক্রামক ধরন অমিক্রনের বিরুদ্ধে উচ্চ অ্যান্টিবডি তৈরি করে। একটি পরীক্ষার (ট্রায়াল) প্রাথমিক তথ্যের আলোকে অ্যাস্ট্রাজেনেকা এমন দাবি করেছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্রিটিশ-সুইডিশ ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান অ্যাস্ট্রাজেনেকা সম্প্রতি জানায়, তারা তৃতীয় ডোজ বা বুস্টার হিসেবে তাদের তৈরি ভ্যাক্সজেভরিয়ার কার্যক্ষমতা নিয়ে পরীক্ষা (ট্রায়াল) চালিয়েছে।
পরীক্ষার প্রাথমিক তথ্যে দেখা গেছে, করোনার বুস্টার ডোজ হিসেবে ভ্যাক্সজেভরিয়া ব্যবহার করা হলে তা অমিক্রনের বিরুদ্ধে উচ্চ অ্যান্টিবডি তৈরি করে।
শুধু অমিক্রনই নয়, করোনার বেটা, ডেলটা, আলফা, গামাসহ অন্যান্য ধরনের বিরুদ্ধেও ভ্যাক্সজেভরিয়া উচ্চ অ্যান্টিবডি তৈরি করে।
অ্যাস্ট্রাজেনেকা বলছে, করোনার বিরুদ্ধে আগে যাঁরা দুই ডোজ ভ্যাক্সজেভরিয়া বা এমআরএনএ টিকা নিয়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে এই টিকার তৃতীয় ডোজের কার্যকারিতা বেশি দেখা গেছে।
ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানটি বলছে, বুস্টার ডোজের জরুরি প্রয়োজনের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে তারা বিশ্বব্যাপী ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর কাছে এই পরীক্ষার তথ্য জমা দেবে।
যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের সঙ্গে মিলে করোনার টিকা তৈরি করেছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা। অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনার টিকা ভারতে কোভিশিল্ড নামে উৎপাদন করছে দেশটির সেরাম ইনস্টিটিউট। বাংলাদেশেও অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা প্রয়োগ করা হচ্ছে।
গত মাসে পরীক্ষাগারে চালানোয় এক গবেষণায় দেখা যায়, ভ্যাক্সজেভরিয়ার তিন ডোজ করোনার নতুন ধরন অমিক্রনের বিরুদ্ধে কার্যকর। পরে কোম্পানিটি ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চালায়। এই ট্রায়ালেও টিকার বুস্টার ডোজের কার্যকারিতার প্রমাণ পাওয়া গেল।
অক্সফোর্ড ভ্যাকসিন গ্রুপের প্রধান অ্যান্ড্রু পোলার্ড বলেন, গুরুত্বপূর্ণ এই পরীক্ষার ফলাফলে দেখা গেছে, ভ্যাক্সজেভরিয়ার দুই ডোজ বা এমআরএনএ টিকা নেওয়ার পর একই টিকার (ভ্যাক্সজেভরিয়া) তৃতীয় ডোজ করোনার বিরুদ্ধে শরীরে শক্তশালী প্রতিরোধব্যবস্থা গড়ে তোলে।
বিশ্বে এখন সবচেয়ে দ্রুত ছড়াচ্ছে করোনার অমিক্রন ধরন। ধরনটির বৈজ্ঞানিক নাম ‘বি.১. ১.৫২৯ ’। গত বছরের নভেম্বরে অমিক্রন প্রথম শনাক্ত হয় দক্ষিণ আফ্রিকায়। পরে তা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। গত ২৬ নভেম্বর ডব্লিউএইচও অমিক্রনকে ‘উদ্বেগজনক’ ধরন হিসেবে তালিকাভুক্ত করে।
ইতিমধ্যে বিশ্বের ১২৮টি দেশে অমিক্রন শনাক্ত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ডেনমার্ক, নরওয়েসহ বিশ্বের বেশ কিছু দেশে দ্রুততার সঙ্গে অমিক্রনের বিস্তার ঘটছে।
No comments