বাংলাদেশকে তুলে ধরতে চাই
অনেকেই যখন দেশ ছেড়ে বিদেশমুখী, তখন সুদূর ইংল্যান্ড থেকে বাংলাদেশে ফিরে সেনাবাহিনীর হয়ে জাতীয় অ্যাথলেটিকসে অংশ নিয়েছেন অ্যাথলেট ইমরানুর রহমান। তাঁর জন্ম ও বেড়ে ওঠা ইংল্যান্ডের শেফিল্ড শহরে। তবে মা ও বাবার সূত্রে শেকড় গাঁথা বাংলাদেশে, সিলেটে। দেশে প্রথমবার দৌড়ে নেমেই হয়েছেন দ্রুততম মানব। ১০ দশমিক ৫০ সেকেন্ডে ১০০ মিটার দৌড়ে ভেঙেছেন ২২ বছরের পুরোনো রেকর্ড। ইংল্যান্ডে মা–বাবার কাছে ফেরার আগে গত শুক্রবার ইমরানুর রহমানের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন রাশেদুল ইসলাম।
প্রথম আলো: আপনি এখন বাংলাদেশের দ্রুততম মানব। নতুন পরিচয়ে মা–বাবার কাছে ফেরাটা নিশ্চয়ই রোমাঞ্চকর!
ইমরানুর: এটা দারুণ অনুভূতি। নিজেকে বিশেষ কেউ বলে মনে হচ্ছে। মা-বাবা দারুণ খুশি। ইংল্যান্ডপ্রবাসী বাংলাদেশিরাও আমাকে নিয়ে গর্বিত।
প্রথম আলো: দৌড় শুরুর আগে কার মুখ আপনার চোখের সামনে ভেসে ওঠে?
ইমরানুর: শুধু পরিবারের কথা ভাবি। মা, বাবা ও স্ত্রী—এই মানুষেরা আমাকে অনেক অনুপ্রেরণা দেন। ট্র্যাকে (দৌড়ের মাঠ) নামার আগেও মা-বাবার সঙ্গে কথা বলি।
প্রথম আলো: ৩ জানুয়ারি যে ভোঁ–দৌড় আপনাকে বাংলাদেশের দ্রুততম মানবের আসনে বসিয়েছে, সেটা শেষ করার পর প্রথম কার কথা মনে পড়েছিল?
ইমরানুর: পরিবারের কথা। দৌড়টা শেষ করার পর খুবই আনন্দিত হয়েছিলাম। কারণ, আমি বাংলাদেশের মানুষের সামনে নিজেকে প্রমাণ করতে পেরেছি, চেনাতে পেরেছি। শুধু দেশের ভেতর দৌড় নয়, বিশ্বে বাংলাদেশকে তুলে ধরতে চাই। বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ান গেমসে বাংলাদেশের পক্ষে পদক জয়ের ব্যাপারে আমি আশাবাদী।
প্রথম আলো: শুরু করেছিলেন ফুটবল দিয়ে, হয়েছেন অ্যাথলেট। আপনি কি মনে করেন ফুটবলার হলে আরও খ্যাতি অর্জন করা যেত?
ইমরানুর: আমি ছোটবেলায় ফুটবল খেলেছি। কিন্তু ফুটবলার হওয়ার স্বপ্ন দেখিনি। ফুটবলটা খুব উপভোগ করতাম, এখনো করি।
প্রথম আলো: আপনার অনুপ্রেরণা কারা?
ইমরানুর: ১৮-১৯ বছর বয়সে শেফিল্ডের এক কোচের অনুপ্রেরণায় অ্যাথলেট হওয়ার মিশন শুরু করি। মা-বাবার সমর্থন পেয়েছি। আমার স্ত্রীও আমাকে অনুপ্রেরণা জোগাচ্ছেন। না হলে চাকরির (হিসাবরক্ষক) পাশাপাশি খেলাটা চালিয়ে যাওয়া কঠিন ছিল।
প্রথম আলো: পরিবারে কেউ খেলার সঙ্গে যুক্ত?
ইমরানুর: না। আমার ছোট দুই বোন আছেন। বাবা শেফিল্ডের রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ী। মা গৃহিণী।
প্রথম আলো: ইংল্যান্ড থেকে বাংলাদেশে এলেন কেন?
ইমরানুর: ইংল্যান্ডে আমি যা দেখিনি, সেটা আমি বাংলাদেশে এসে পেয়েছি। বাংলাদেশের সংস্কৃতি, এখানকার সমাজব্যবস্থা আমার ভালো লেগেছে।
প্রথম আলো: পছন্দের কোনো খাবার আছে, যা ইচ্ছা থাকলেও ফিটনেস নষ্ট হওয়ার ভয়ে খান না?
ইমরানুর: মিষ্টি খেতে ভালো লাগে। কিন্তু ইচ্ছা হলেই মিষ্টি খাই, বিষয়টা তেমন নয়। বাংলাদেশে অনেকেই বিরিয়ানি খাওয়ানোর কথা বলেছিলেন, আমি খাইনি।
প্রথম আলো: আপনার প্রিয় অ্যাথলেট কে?
ইমরানুর: আমি ফুটবল উপভোগ করি। প্রিয় খেলোয়াড় ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো (পর্তুগিজ ফুটবলার)। অ্যাথলেটিকসে আমার প্রিয় জাস্টিন গ্যাটলিন (আমেরিকান দৌড়বিদ)।
প্রথম আলো: আপনার বয়স এখন ২৮ বছর। কোন বয়স পর্যন্ত দৌড় চালিয়ে যেতে চান?
ইমরানুর: ৩৪ বছর। বাংলাদেশের জন্য কিছু করতে হবে। দক্ষিণ এশিয়ান গেমসে পদক জেতার স্বপ্ন দেখি।
No comments