Breaking News

৪০ দেশের ক্রেডিট কার্ড ক্লোন করে টাকা তুলতো তুরস্কের জানবুরকান

 গ্রেফতারকৃত তুরস্কের নাগরিক হাকান জানবুরকান।

প্রায় ৪০টি দেশের ক্রেডিট কার্ড ক্লোন করতো বলে জানিয়েছেন তুরস্কের নাগরিক হাকান জানবুরকান। এই ক্লোনিংয়ের মধ্যে সে বুথ থেকে টাকা তুলে নিতো।  মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) রাতে রাজধানীর গুলশান থেকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)-এর হাতে গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সেই এই তথ্য দিয়েছে। বুধবার (১৯ জানুয়ারি) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে ডিএমপির সিটিটিসি প্রধান আসাদুজ্জামান এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।

সিটিটিসির অভিযানে হাকান জানবুরকান ছাড়াও বাংলাদেশি নাগরিক মো. মফিউল ইসলামকেও গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৫টি বিভিন্ন মডেলের মোবাইলফোন সেট, ১টি ল্যাপটপ, ১৫টি ক্লোন কার্ডসহ ১৭টি কার্ড জব্দ করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে সিটিটিসি প্রধান আসাদুজ্জামান বলেন, ‘হাকান গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর বাংলাদেশে আসে। ২ জানুয়ারি থেকে ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডের বিভিন্ন বুথে গিয়ে কার্ড ক্লোন করে স্কেমিংয়ের মাধ্যমে শতাধিকবার টাকা উত্তোলনের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। ইস্টার্ন ব্যাংক লি. এন্টি ফেমিং টেকনোলজি ব্যাবহার করায় অ্যালার্ম সিস্টেমের মাধ্যমে বিষয়টি  জেনে যায়। এরফলে তারা হ্যাকারদের হাত থেকে স্কেমিং রোধ করতে সক্ষম হয়। হাকান একাধিকবার একাধিক পাসপোর্ট ব্যবহার করে বাংলাদেশে এসেছে। সে ২০১৬, ২০১৮, ২০১৯, ২০২০ ও ২০২১ সালে বাংলাদেশে আসে। এসে তার সহযোগী মফিউল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করে। এই মফিউল ইসলামের ভাই একই অপরাধে গ্রেফতার হয়ে ভারতে জেল হাজতে রয়েছে।

সিটিটিসি প্রধান বলেন, হাকান জানবুরকান গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর বাংলাদেশে এসে রাজধানীর পল্টন এলাকায় একটি আবাসিক হোটেলে  ওঠে। এরপর ২ জানুয়ারি থেকে ৪ জানুয়ারি ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডের বিভিন্ন বুথে যায়। অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, ইউএসএ, ইন্ডিয়া, তুরস্ক, সৌদি আরব, অস্ট্রিয়া, জার্মানি, ভিয়েতনাম, যুক্তরাজ্য, কানাডা, বলিভিয়া, স্পেন, ফিনল্যান্ড, নরওয়েসহ প্রায় ৪০টি দেশের নাগরিকের ক্রেডিট কার্ড ক্লোন করে স্কেমিংয়ের মাধ্যমে টাকা তোলার জন্য চেষ্টা করে।

জিজ্ঞাসাবাদে তুরস্কের এই নাগরিক স্বীকার করে, ২০১৯ সালে ভারতের আসাম রাজ্যের বিভিন্ন এটিএম বুথ থেকে কার্ড ক্লোনিং করে প্রায় ১০ লাখ রুপি আত্মসাৎ করে। এই ঘটনায় এক তুরস্কের নাগরিক ও ২ বাংলাদেশিকে গ্রেফতার করে আসাম পুলিশ। এরপর আসামিরা  ভারতে প্রায় ২০ মাস জেলে থাকার সময় আগরতলার গোবিন্দ বল্লভ প্যান্ট হাসপাতালে পুলিশ হেফাজত থাকে। সেখান থেকে চিকিৎসাধীন থাকাবস্থায় হাকান কৌশলে পালিয়ে যায়। পরবর্তী সময়ে ভারতের এক নাগরিকের সহায়তায় দুই লাখ রুপির বিনিময়ে সিকিম হয়ে নেপালে পৌঁছায়। সেখান থেকে ট্রাভেল ডকুমেন্ট সংগ্রহ করে তুরস্কে ফিরে যায়। আবারও নতুন পাসপোর্ট তৈরি করে। এই চক্রে একাধিক বাংলাদেশি, তুরস্ক, বুলগেরিয়া, মেক্সিকো, ইন্ডিয়াসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিক জড়িত রয়েছেও স্বীকার করেছে হাকান। 

গ্রেফতার আসামিদের বিরুদ্ধে রাজধানীর পল্টন থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর সঙ্গে কারা জড়িত, তা জিজ্ঞাসাবাদে জানা যাবে বলেও উল্লেখ করেন আসাদুজ্জামান।

 

No comments